ষ্টুটগার্ট এ নৌভ্রমন - 2
গ্রামে যাওয়ার সুবিধার্থে ছোট বেলায় অনেক নৌকা ভ্রমন করেছি বর্ষাকালে বিশেষ করে আমাদের নানাবাড়ীর পাশে একসময় ইছামতী নদী ছিল। রাতের আধো চাদের আলোয় জ্যোৎস্না ভরা নোকা ভ্রমন করেছি ঝি ঝি পোকার শব্দে এবং পানির ছলত ছলত শব্দে। মাঝে মধ্যে ফ্রি নৌকার মাঝির গানও শুনা যেত – ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালী অথবা পল্লীগীতি।
কিন্তু এই বিশেষ নাম বিশেষ করে জার্মানীতে যে নৌকা ভ্রমন হবে আশা করিনি। ইউরোপের বিখ্যাত নদী হচ্ছে “রাইন নদী” (Rhine River)। যেটা কিনা আমাদের শীতকালীন ছোট নদীর মত।
ইউরোপের গর্ব এই নদীতে সারাদিন ভ্রমন, তার সাথে থাকবে লাঞ্চ এবং বিকেলের স্নেকস। যারা ড্রিংক করে তাদের জন্য অফুরন্ত বিয়ার, ওয়াইন, ওয়িস্কি।
আমি যেহেতু ড্রিংক করি না তাই শুধু লেমন ও অরেঞ্জ জুসে সীমাবদ্ধ থাকলাম। বেশ কয়েকজন বাংলাদেশীর সাথে পরিচয় হলাম যারা বিভিন্ন কোম্পানির জি.এম. ছিইও, এবং মালিক। বাংলাদেশি অনেক মানুষ ছিল, আমরা যার যার মত বিভিন্ন গ্রুপ এর সাথে গল্প করতে থাকলাম, দুইপাশে শহর, গ্রাম দেখতে লাগলাম। মনে হলো জার্মানি এত সুন্দর হলে সুইজারল্যান্ড যেন কেমন হবে। কিছুটা রোমাঞ্চিত হলাম। মাঝে মাঝে সুন্দর ডুপ্লেক্স বাড়ি। যাদের বাগানে অসংখ্য ফুল গাছ। কেও শখে মাছ ধরছে বড়শি দিয়ে। মনে হলো অসম্ভব সুখী মানুষ এরা।
সবচেয়ে আশ্চর্যকর ব্যাপার ছিল সূর্য ডুবা। আমরা দেখলাম সূর্য ডুবছেনা। রাত বাজে ৮টা। একজন জার্মানকে জিজ্ঞাসা করলাম। বললো এখনতো সামার। রাত ৯টায় সূর্য ডুববে। সূর্য উঠবে রাত ২.৩০ থেকে ৩টার দিকে।আমিতো অবাক- ঘোমাবো কখন?
রিভার ক্রুজিংএ একটা আশ্চর্য জিনিষ দেখলাম। আমাদের ক্রুজ বাধা পরলো একটা swiss Gentlemen সেও বললো, সামনে পানি অনেক নিচে, দুই পাশের পানির সমতা আস্তে সময় লাগবে। তারপর সুইজগেট খুলবে অপর পাশে যাওয়ার জন্য।
আমি জীবনে কখনো দেখিনি এই উচ্চতার নদী অনেক নিচের নদীর সাথে মিশে যাচ্ছে। সবাই প্রস্তুতি নিচ্ছে ডিনার করার জন্য কারন ৯টা বাজে কিন্তু এখনো সূর্য ডুবেনি।
আরেকটা ঘটনা, একজন গেস্ট, বাংলাদেশী হোটেলে গিয়ে বলল তার মানিবেগ হারিয়ে ফেলেছে। মজার ব্যাপার পরেরদিন সকালে সেই প্রমোদতরীর মালিক ও ম্যানেজার হাজির মানিব্যাগ নিয়ে। এ ধরনের ঘটনা খুব কম দেখেছি নিজের দেশে। এজন্য খুব অবাক লাগলো।
Comments
Post a Comment