ছোট গ্রামে থাকা -7
খরচ কমানোর জন্য আমরা অষ্ট্রিয়ার একটি ছোট শহরে হোটেল নিয়েছিলাম। ভাড়া ১০০+ ইউরো ছিলো। রাতে হোটেলে থাকতাম অস্ট্রিয়াতে কিন্তু দিনে সুইজারল্যান্ড। সারা দিনের মধ্যে অর্ধেক দিন অফিসে ট্রেনিং বাকি দিন ফেমাস টুরিস্ট প্লেস গুলোতে ঘুরে বেড়ানো। অসাধারণ দিনগুলো। একটা গ্রাম এত সুন্দর ছবির মত হতে পারে ভাবা যেত না। কিন্তু এই ছোট গ্রামে আমি প্রথম সেন্সর বেস পানির কল দেখি। হাত নিচে নিলে পানি পড়ে। যদিও এখন খুব নরমাল কিন্তু আজ থেকে ১০ বছর আগে ২০১০ সালে বাংলাদেশে শুধু পাঁচ-তারকা হোটেল গুলাতে ছিল। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে যেতাম। জেট ট্যাগ, টাইমিং, সবসময় সমস্যা হয় ঘুমের। সন্ধ্যা নামতে রাত ১০টা বাজতো। আবার দেখি রাত ৩/৪ টার দিকে সূর্য উঠছে। বুঝতে পারছিলাম না এখানকার মানুষ ঘুমায় কখন? এরা কি সূর্য ডুবার আগে ঘুম শুরু করে এবং সকালে সূর্য উঠার পরও ঘুমায়। যদিও অফিস সময় কিন্তু সকাল ৮ টা থেকে। আমার জন্য যেহেতু প্রথম ইউরোপ ভ্রমন সেহেতু সবকিছু নতুন, অন্যরকম লাগছিলো। মনে হচ্ছিল সেকেলে চিন্তার সাথে যেন একালের ব্যবধান। সকালে অফিসে সেমিনারে যাওয়ার আগে ব্রেকফাস্ট সারতাম তারপর আশেপাশের দূর্বা ঘাসের উপর হাঁটতাম। যদিও শীতকাল না তারপরও মনে হত শিশির ভেজা স্নিগ্ধ সকাল। এত অপরূপ রুপে পাহার ঘেরা, সবুজ চারদিকে, ফুল আর ফুলে মোহরিত। পৃথিবী কত সুন্দর হতে পারে সেটা দুটো দেশ ভ্রমন না করলে কখনো হয়তো বুঝতে পারতাম না। একটা নিঃসন্দেহে সুইজারল্যান্ড কিন্তু আরেকটা ? মালদ্বীপ। এই দুটো দেশে ঘুরার সময় মনে হচ্ছিল ভুল করে স্বর্গের মধ্যে চলে এসেছি। ধন্যবাদ সৃষ্টিকর্তাকে যে এই সৌন্দর্য দেখতে পেয়েছি। কিন্তু আমি যতবারই ক্যামেরাতে ছবি তুলেছি পরে যখন স্মৃতিচারণ করেছি মনে হয়েছে চোখ দিয়ে দেখার সৌন্দর্য যেটা ক্যামেরা কখনো তুলতে পারবে না। এটার ব্যাখ্যা হয়তো মানুষের চোখে যে পরিমান পিক্সেল এর ক্ষমতা, পৃথিবীর কোন ক্যামেরা হয়তো এখনো সমপরিমান ক্ষমতার হয়নি। হয়তো ভবিষ্যতে পারবে।
Comments
Post a Comment