জীবনে প্রথম Switzerland ভ্রমন - 1
জীবনে প্রথম ভ্রমন। তারপর আবার সুইজারল্যান্ড। ভাবা যায়।
সম্পূর্ণ খরচ বহন করবে যারা আমন্ত্রন করেছে তারা। সুইস-ভিত্তিক এবং জার্মান-ভিত্তিক দুইটা প্রতিষ্ঠান। খুব খুশি এবং এক্সাইটেড লাগছিলো। সালটা ছিল ২০১০। সামার চলছিলো সুইজারল্যান্ডে তখন। তাপমাত্রা ২০-২৫°C। ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন দেখছিলাম পৃথিবীর অনেক দেশ ভ্রমন করবো তার মধ্যে সবার উপরে ছিল সুইজারল্যান্ড, মালদ্বীপ ও বালি। সৃষ্টিকর্তার কৃপায় যদিও পরে এই দেশগুলো দেখা হয়েছে পরে কিন্তু আজ শেয়ার করবো জীবনের প্রথম ভ্রমন অভিজ্ঞতা।
বোর্ডিংপাস পর্ব শেষ করে প্রথম এয়ারপোর্ট এর ইমিগ্রেশন অফিসার এর মুখোমুখি। দেখি পুলিশের ড্রেস পরা এবং আমার পাসপোর্টে একমাত্র সুইস ভিসা দেখে ভদ্রলোক বিশ্বাস করতে পারছে না। আমাকে জিজ্ঞাসা করছে আপনি থেকে যাবেন নাতো। আপনার বয়সও কম। দেশের জন্য ভাল বৈদেশিক মূদ্রা আসবে আপনি থেকে গেলে, কিন্তু আমার চাকরী চলে যেতে পারে। আমি শুধু বললাম যাবার ইচ্ছা নাই- দেশে খুব ভালো চাকরী করছি। তিনি তার বসের সাথে কথা বললো, ইনভাইটেশন কার্ড দেখতে চাইলো তারপর বললো- যান। থেকে যেতেও পারেন বা চলে আস্তেও পারেন।
ঢুকতে হলো জার্মানীর ফ্রাঙ্কফুট হয়ে কারন ষ্টুটগার্ট কয়েক দিন থাকতে হবে। এয়ারপোর্ট থেকে চার ঘণ্টার বাস জার্নি। প্রথম ইউরোপের ভিতর বাস জার্নি। মনে হচ্ছিল বাসের স্পীড ১৫০কি.মি. এর মত। সবাইকে সিট বেল্ট বাধতে বাধ্য করা হলো, মানে আমরা যারা বাংলাদেশ থেকে এসেছি কনফারেন্স এ জয়েন করার জন্য।
আমাদের মধ্যে কয়েকজন ছিল যারা জার্মান ও সুইস কোম্পানির প্রতিনিধি। ৫ ঘন্টা পরে জার্মানীর ষ্টুটগার্ট এ হোটেলে চেক-ইন হল।
চমৎকার ঘটনা ঘটলো লাঞ্চ করার সময়। আমরা যখন সবাই বাফেট এ খাচ্ছিলাম যার যার চয়েস মত। যখন চিকেন Sausage নিচ্ছিলাম, পাশে আরেকটা sausage দেখলাম কিছুটা লালচে। মনে হলো এটা pork কিনা। খেলাম না। কিন্তু দেখলাম একজন হুজুর (লম্বা দাড়ি, পায়জামা-পাঞ্জাবী পরিহিত) খুব মজা করে খাচ্ছে। আমি পাশের টেবিলে এশে বললাম আপনি জানেন আপনি কি খাচ্ছেন? উনি বললেন না তো। আমি উয়েটার মেয়েটাকে ইংরেজিতে জিজ্ঞাসা করলাম। মেয়েটা জার্মান ভাষায় জবাব দিলো… কি বললো বঝলাম না কেউই। আবার ইংরেজিতে বললাম can you say that word in English, please? মেয়েটি উত্তর দিলো “Wait. Let me check dictionary”.
একটা কম্পিউটারে চেক করে এসে বললো, “This is pork”। যে লোকটা মাওলানা সাহেব, মজা করে এতক্ষণ খাচ্ছিল সে লাফ দিয়ে উঠে বললো, “লা হাউলা ওয়ালা কুয়াতা,” “নাউজুবিল্লাহ নাউজুবিল্লাহ ”। এ লোকের কার্যক্রমে হাসবো না দুঃখ প্রকাশ করবো বুঝতে পারছিলাম না।
তবে বিদেশ ভ্রমনে কোন খাবার পরিচিত না হলে অবশ্যই জেনে খাওয়া উচিৎ। যারা ধর্মে বিশ্বাস করে তাদের হারাম হালাল মেনে চলার সুবিধার্থে।
Comments
Post a Comment